শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রমনা বিএনপির কার্যালয় ভেঙে আ.লীগ নেতাদের মার্কেট, ১৬ বছর পর মামলা বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি সর্বস্বান্ত মানুষ ওষুধ কোম্পানির বেপরোয়া মুনাফার ফাঁদে বৃষ্টি কবে থামবে, যা জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর অলিতাজ মনি”র ক‌বিতা গুচ্ছ অচল পয়সার বিটিভির ডিজি, জিএম, পিএম(সংগীত) সিন্ডিকেটের অডিশন বাণিজ্যের কোটি কোটি টাকা লেনদেনের ফোন আলাপ ফাঁস : ভুয়া বিল-ভাউচারে শিল্পী সম্মানির ১৩.২৮ কোটি টাকা গায়েব হরিরামপুরে যুবলীগ নেতার ওপর হামলায় মামলা দায়ের হরিরামপুরে যুবলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত রফিকের প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে ‘মিথ্যাবাদী’

রমনা বিএনপির কার্যালয় ভেঙে আ.লীগ নেতাদের মার্কেট, ১৬ বছর পর মামলা

প্রতিবেদকের নাম
add

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের পাশে রমনা থানা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় ও কাউন্সিলের অফিস ভেঙে সেখানে মার্কেট তৈরি করেছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। তোলা হয়েছিল ১০টির মতো দোকান। ২০০৯ সালের সেই ঘটনার ১৬ বছর পর মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বাদী হয়ে রমনা থানায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন তৎকালীন ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও রমনা থানার সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ।

মামলায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকা সাচ্চু শেখ, সাবেক কাউন্সিলর কামরুজামান কাজল, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ রইসুল ইসলাম ময়না, এম এ রহিম রানাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বাদী বিএনপি নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকেরও দায়িত্বে ছিলেন। মামলার আগে এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

জানা গেছে, আরিফুল ইসলাম আরিফের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ১১০ বছর যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল। দুই দফায় তিনি মামলাটিতে ৮ বছর কারাবাস করেন। এরপর গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের হলে ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর মুক্তি পান আরিফ।

মামলার অভিযোগে বিএনপির এই নেতা উল্লেখ করেছেন, ওই এলাকার কাউন্সিলর ও বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সিদ্ধেশ্বরী বয়েজ স্কুল থেকে স্কুলের নিজস্ব জায়গায় স্কুলের অনুমতিক্রমে তাদের জমিতে বিএনপির কার্যালয় গড়ে তোলেন। সেখানে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। মাসিক ভাড়া বিদ্যুৎ ও পানির নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছিলেন। পরবর্তীতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে রায়ে তার ১১০ বছরের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
প্রথমবার ২০০৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর দুই বছর পরে মুক্তি পান। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে গ্রেফতারের পর টানা ছয় বছর কারাগারে কাটে তার।

তিনি অভিযোগ করেন, গ্রেফতারের পর মামলার আসামিরা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী এজাহারভুক্ত আসামি সাচ্চু শেখ, এম এ রহিম রানা, ড্রাইভার রানা, মফিজুল হক জন, সোয়েব চৌধুরী তপন, এ কে এম রফিকুজ্জামান চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, কামরুজ্জামান কাজল, নাহিদ, মানিকসহ অজ্ঞাত অনেক সন্ত্রাসীদের নিয়ে কার্যালয় ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে সেখানে দোকানপাট তুলে ভাড়া দেয় এই আওয়ামী লীগ নেতারা।

মামলায় আরিফ অভিযোগ করেন, ভাঙচুরের সময় আওয়ামী লীগ নেতারা জিয়া পরিবারের সদস্যদের ছবি টেনেহিঁচড়ে খুলে ফেলে ছবিসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের সময় স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ বাধা দিতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা সাচ্চু শেখ পিস্তল বের করে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেন। পরে বুলডোজার দিয়ে কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

মামলার বিষয়টি ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।’

মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন রমনা থানার উপ-পরিদর্শক আবুল বাশার। জানতে চাইলে তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘মামলার বিস্তারিত এখনো জানতে পারিনি। দ্রুতই দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এতদিন পর মামলা করার বিষয়ে বাদী বিএনপি নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমাকে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয়েছে। বাইরে থাকাবস্থায় আওয়ামী লীগের সময়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। মামলা করার পরিবেশও ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মমলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা সরাসরি উপস্থিত থেকে বিএনপির কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে দোকানপাট তৈরি করেছে। জড়িতদের অনেকেই এতদিন এলাকায় চলাচল করতেন। তাই এদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। পাশাপাশি কার্যালয়টি আগের জায়গায় পুনঃস্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’

আরিফুল ইসলাম আরিফ আরও বলেন, ‘জমিটি যেহেতু স্কুলের, তাই আমরা নিয়ম অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আবারও ওখানে কার্যালয় স্থাপন করতে চাই।’

add

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের ফেসবুক পেইজ