রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি সর্বস্বান্ত মানুষ ওষুধ কোম্পানির বেপরোয়া মুনাফার ফাঁদে বৃষ্টি কবে থামবে, যা জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর অলিতাজ মনি”র ক‌বিতা গুচ্ছ অচল পয়সার বিটিভির ডিজি, জিএম, পিএম(সংগীত) সিন্ডিকেটের অডিশন বাণিজ্যের কোটি কোটি টাকা লেনদেনের ফোন আলাপ ফাঁস : ভুয়া বিল-ভাউচারে শিল্পী সম্মানির ১৩.২৮ কোটি টাকা গায়েব হরিরামপুরে যুবলীগ নেতার ওপর হামলায় মামলা দায়ের হরিরামপুরে যুবলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত রফিকের প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে ‘মিথ্যাবাদী’ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জয়বাংলা সাংবাদিক মঞ্চের শ্রদ্ধা নিবেদন

নিয়োগ বাণিজ্যে এলজিইডি ভবনে তুলকালাম

প্রতিবেদকের নাম
add

জাহাঙ্গীর খান বাবু  : স্থানীয় সরকার অধিদফতর (এলজিইডি) এ বিভিন্ন পদে (জিওবি) নিয়োগ ৩ হাজার জনবল নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ ঊঠেছে এলজিইডির ইতিহাসে বিরল এই বিপুলসংখ্যক নিয়োগ বাণিজ্যের বিপরীতে প্রায় শত কোটি টাকার বাণিজ্য চালিয়েছে তদবিরবাজ চক্র।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী সেক মো. মহসিন আলীর চাকুরীর মেয়াদের একমাস আগে ও জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই নিয়োগ বানিজ্যর ঘটনা সরকারের ভাবমূতি নষ্টের গভীর ষরযন্ত্র অংশ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠরা। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন একাঠিক কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ৩ হাজার জনবল নিয়োগের বিপরীতে জনপ্রতি সর্বাধিক ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা সহকারী প্রধান প্রকৌশলী (প্রশাসন) কামরুজ্জামান ও সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল এই তদবিরবাজ চক্রের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে শতকোটি টাকা। এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, উপসহকারী প্রকৌশলী,ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে ও অফিস সহকারী পদে নিয়োগ চুড়ান্তের পথে। এছাড়া গত শুক্রবার নেয়া হয়েছে ৪০০ নাইটগার্ড পদে ইন্টারভিউ।
এলজিইডির একাধিক সূত্র জানিয়েছে,এত বিপুল সংখ্যক জনবল নিয়োগ বিগত ২০ বছরেও এলজিইতে নিয়োগ দেয়া হয়নি। প্রধান প্রকৌশলী সেক মোঃ.মহসিন মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে দুর্নীতিবাজ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ নিয়োগ ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে। ছাত্রশিবির-ছাত্রদলের কর্মীদের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে ওপেন সিক্রেট। প্রতিটি নিয়োগের বিপরীতেই ন্যূনতম ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট।
এলজিইডির সহকারী প্রধান প্রকৌশলী (প্রশাসন) কামরুজ্জামান এই অনিয়মের সমন্বয় করে থাকেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের এপি এস জাহিদ চৌধুরীর নামেও রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ।
এসব অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত এলজিইডির সহকারী প্রধান প্রকৌশলী (নির্বাহী প্রকৌশলী) কামরুজ্জামানকে গাজীপুরে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে বদলি করা হয়েছে। অভিযোগে রয়েছে ঘুষ দুর্নীতির সাথে জড়িত এই দুর্নীতিবাজ কর্মতাকে নিরাপদে রাখার জন্যই তাদের বিরুদ্ধে নানামুখে অভিযোগ উঠায় প্রধান প্রকৌশলী সেক মোঃ মহসিন ব্যবস্থা না নিয়ে তড়িঘড়ি করে তাদের বদলি করে দিয়েছেন।
প্রতিটি পদে লিখিত পরীক্ষায় ৭০ মার্ক নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে এবং এই পরীক্ষায় নৈবিত্তিক পদ্ধতিতে নেয়া হয়ে থাকে। ভাইবা ছাড়া (মৌখিক পরীক্ষায়) ৩০ নাম্বারে পরীক্ষা নিয়ে থাকলেও এখানেও পেন্সিল দিয়ে চূড়ান্ত নাম্বার দেয়া হয়। এনিয়ে অর্থ লেনদেনের ঘটনা চূড়ান্ত হয়ে গেলে, রাবার পেন্সিলে নির্ধারিত মার্ক সরিয়ে দিয়ে পুনরায় মার্ক বসিয়ে দেয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে পিএসসির অধীনে চাকুরী প্রার্থীদের পরীক্ষার খাতা দেখানো হলেও সেখান থেকে পেন্সিলেই মার্ক নির্ধারণও কাউন্ট করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে পরীক্ষার নাম্বার নির্ধারণের ক্ষেত্রেও কাউন্টিংয়ের আগে থেকেই পছন্দের প্রাথীদের রোল নাম্বার সেভ করে দেয়া হয় কাউন্টিংএ। এটি করা হয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে।
এসব পরীক্ষা হয়েছে লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর ১০ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, আহমেদ ভবানী একাডেমী আরমানিটোলা, দনিয়া এ কে স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
গত দু সপ্তাহ আগে বিভিন্ন পদে ২১শ জনবল নিয়োগের পরীক্ষা সম্মত হয়েছে অভিযোগ রয়েছে এসব পরীক্ষার প্রস্তুতির আগেই চলছে দেন দরবার।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন এসব নিয়োগ বাণিজ্যে মেধাকে গুরুত্ব না দিয়ে অর্থকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কারণে সরকারের শেষ সময় এলজিইডিকে অস্থিতিশীল করার জন্য জামাত শিবির ও বিএনপিপন্থী লোকদের নিয়োগ নিশ্চিত করা হচ্ছে। আর এসব করা হচ্ছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে।
আরো জানাগেছে,শুক্রবার পরীক্ষার দিন ধার্য করা হলেও বৃহস্পতিবার ভবনের গেট সিলগালা করে রাখা হয় সাংবাদিকদের প্রবেশ ও নিষেধ করে দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে পরীক্ষার আগের দিনই ভবনের উচ্চ পদস্থ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা মিটিংয়ে মিলিত হয়ে দুর্নীতি অর্থ ভাগাভাগি করে থাকে। সে মিটিং চলাকালে সাধারণ কর্মকতাদেরও প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। পুরোটাই চলে গোপনীয়তা রক্ষা করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এলজিইডি ভবনে অফিসিয়াল কাজে এসে বিপাকে পরে বাইরে অলস সময় পার করেন আগত কর্মকর্তারাও।
এলজিইডি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন) শফিকুর রহমান এ বিষয়ে বারবার মোবাইলে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

add

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের ফেসবুক পেইজ