সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি সর্বস্বান্ত মানুষ ওষুধ কোম্পানির বেপরোয়া মুনাফার ফাঁদে বৃষ্টি কবে থামবে, যা জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর অলিতাজ মনি”র ক‌বিতা গুচ্ছ অচল পয়সার বিটিভির ডিজি, জিএম, পিএম(সংগীত) সিন্ডিকেটের অডিশন বাণিজ্যের কোটি কোটি টাকা লেনদেনের ফোন আলাপ ফাঁস : ভুয়া বিল-ভাউচারে শিল্পী সম্মানির ১৩.২৮ কোটি টাকা গায়েব হরিরামপুরে যুবলীগ নেতার ওপর হামলায় মামলা দায়ের হরিরামপুরে যুবলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত রফিকের প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে ‘মিথ্যাবাদী’ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জয়বাংলা সাংবাদিক মঞ্চের শ্রদ্ধা নিবেদন

না ফেরার দেশে চলে গেলেন মকবুল। আর কখনো যাবেন না গ্রন্থাগারে

প্রতিবেদকের নাম
add

মোঃ মাহবুবুল আলম খান

রুটিন করে সপ্তাহে দুই দিন দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে ঘুরতেন ৭২ বছর বয়সী মকবুল হোসেন। বিশেষ করে শহরের কাছারি এলাকার পুরোনো বইয়ের দোকানগুলোতে তাঁর নিত্য আসা-যাওয়া। ঘুরে ঘুরে গল্প, উপন্যাস কিংবা কবিতার বই সংগ্রহ করে নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছিলেন সেঁওতি গ্রন্থাগার। তবে মকবুলের প্রিয় গ্রন্থাগারে আর তাঁকে দেখা যাবে না। নতুন কোনো বই কিনতে আর ঢুঁ মারবেন না চেনা বইয়ের দোকানে।

আজ মঙ্গলবার বার্ধক্যজনিত কারণে মকবুল হোসেন মারা গেছেন। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি। সোমবার দিবাগত রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আজ বেলা দুইটায় দিনাজপুর সারদ্বেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে শহরের সোনাপীর কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শহরের সর্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মকবুল হোসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের জনক মকবুল হোসেন একসময় রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭২ সালে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। পরবর্তী কাউন্সিলে তিনি সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ছাত্রজীবন থেকে বই পড়া ও সংগ্রহ করার নেশা ছিল তাঁর। জীবনের শেষ বয়সে এসে বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছিলেন সেঁওতি গ্রন্থাগার। তাঁর গ্রন্থাগারে আলমারিতে সাজানো আছে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ১০ হাজারের বেশি বই। বই সংগ্রহের পাশাপাশি কবিতাও লিখতেন তিনি। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় দিনাজপুর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হতো ছোট কাগজ ‘সেঁওতি’।
২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর ৮ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘রাজনীতির মাঠ ছেড়ে বইয়ের ভুবনে’ শিরোনামে মকবুলকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের উদ্যোগে মকবুলকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

ওই সাক্ষাৎকারে মকবুল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘যত দিন বেঁচে থাকব, সেঁওতি প্রকাশ হবে। মৃত্যুর পরেও যেন সেঁওতি বন্ধ না হয়, এ জন্য সম্পাদককে অনুরোধ করেছি।’
শেষ বয়সে মকবুলের সঙ্গী ছিলেন বীরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুল হক। সেঁওতির প্রকাশক তিনি। মকবুলের স্মৃতিচারণা করে মাসুদুল হক বলেন, মকবুল তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবেন। এই যে বিশাল বড় বইয়ের ভান্ডার গড়েছেন, এটাই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে। মকবুলের প্রিয় ছোট কাগজ ‘সেঁওতি’ যেভাবে প্রকাশিত হতো, সেটি সেভাবেই প্রকাশিত হবে।

add

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের ফেসবুক পেইজ